সুবর্ণচরের মৌয়াল আলতাফ ছুটেন মৌচাকের খোঁজে
- ০৯:৪৯
- উপকূল সংবাদ, নোয়াখালী জেলা, পূর্ব-উপকূল, ফিচার, বাঁচার লড়াই
- ৫১৭
ডেস্ক উপকূল বাংলাদেশ Θ নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মৌয়াল আলতাফ হোসেন (৪০) ২০ বছর ধরে মধু সংগ্রহ করেছেন। যা শুধু তার পেশাই নয়, নেশাও বটে। মৌচাকের খোঁজ পেলেই ছুটে যান দূর-দূরান্তে।আলতাফ হোসেনের বাড়ি চর জুবিলী ইউনিয়নের চর মহিউদ্দিন গ্রামে, বাবার নাম আব্দুল আলী। তাদের আদি বাড়ি হাতিয়ার সাগরিকায়। এক সময় সাগরিকা ও বুড়িরচরের বড় এলাকা জুড়ে ছিল সরকারি বন। যার অনেকটা পরে নদীতে তলিয়ে যায়। সেখানে থাকাকালে বন বিভাগ থেকে বাৎসরিক ২৫-৩০ হাজার টাকায় বন লিজ নিয়ে মধু সংগ্রহ শুরু করেন। ১০ বছর আগে বন ধ্বংস ও নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সুবর্ণচরে চলে আসেন। কিন্তু কাটেনি মধুর নেশা।
চর জুবিলীর আশেপাশে বিভিন্ন চরে রয়েছে সরকারি বন। মধুর নেশায় এ সব বন ছাড়াও বাইসাইকেল নিয়ে আলতাফ ছুটে যান উপজেলার আনাচে-কানাচে। নোয়াখালীর যেকোনো স্থানে মৌচাকের খবর পেলেই আলতাফ উপস্থিত হন। বাড়ির মালিকের সঙ্গে অাধা-আধি চুক্তিতে মধু সংগ্রহ করেন।
সাধারণত চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি সময়ে চলে মধু সংগ্রহ। বাকি দুই মাস তিনি অন্য কাজ করেন। মধু সংগ্রহের বিস্তারিত জানান এভাবে, মৌমাছিরা বিচিত্র ধরনের গাছে বাসা বাধে। কোনোটাই উঠা সহজ, কোনোটাই কঠিন। এর মধ্যে রয়েছে- আম, বরই, কড়ই, জাম ও তুলা গাছ। তার জন্য গাছ কোনো বিষয়ই নয়। কাঁটা গাছ হলেও তার তর সয় না, মুহূর্তেই লেগে যান মধু সংগ্রহে। প্রথমে আগুন দিয়ে মৌচাক থেকে মৌমাছি তাড়িয়ে দেন। এরপর মুখে গামছা পেচিয়ে গাছ থেকে মৌচাক কেটে নামান এবং ছোট ছোট টুকরো করে সেখান থেকে মধু বের করেন। এ সময় সঙ্গে থাকে মধু নেওয়ার বালতি, মধুরচাক কাটার দা বা কাচি ও মধু মাপার পাত্র। এ থেকে দুই মাসে কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকার মধু বিক্রি করেন। মৌমাছির আক্রমণ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি আর মৌমাছি আমাকে বিশ্বাস করে। তারপরেও অনেক সময় পোকার আক্রমণের শিকার হয়েছি।’
আলতাফের খাঁটি মধুর ক্রেতারও অভাব নেই। তাকে নিয়ে যেতে হয় না। বরং, দূর-দূরান্তের ক্রেতারা নিজেরাই ছুটে আসেন। এখন প্রতি কেজি মধুর দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। এতে করে ৬ জনের পরিবার ভালোই চলছে।
/সৌজন্যে-দ্য রিপোর্ট/১৫০৫২০১৪//
