২৯ এপ্রিল স্মরণ, উপকূল সুরক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার দাবি
- ২২:১০
- উপকূল আজ, উপকূল সংবাদ, জাতীয়-উপকূল, জীবনধারা, দুর্যোগ-দুর্বিপাক, প্রধান প্রতিবেদন, শীর্ষ সংবাদ, সর্বশেষ
- ২৮৮
ঢাকা, ২৯ এপ্রিল ২০১৭: আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক মানব বন্ধন থেকে উপকূলীয় এনজিও জোটের ব্যানারে ২৯ এপ্রিল’৯১ ভয়াল ঘূর্ণিঝড় স্মরণ করা হয়। মানব বন্ধনের মুল দাবী ছিলো উপকূলের জমি ও মানুষের সুরক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কার এবং উপকূল রক্ষার নামে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এর ঠিকাদারেদের মাঝে ব্যবসা বন্ধ করা।
মোস্তফা কামাল আকান্দ সহকারী পরিচালক কোস্ট ট্রাস্ট মানব বন্ধন সঞ্চালনা করেন এবং মূল দাবীর পাশাপাশি উপকূল বাসীর পক্ষে ৮ দাবী তুলে ধরেন। যার মধ্যে অন্যতম হলো উপকূলের ভূমি ও সম্পদ রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কাজের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। আয়োজক সংগঠনসমূহ: অনলাইন নলেজ সোসাইটি, অর্পণ, আলোক যাত্রা, উদ্দীপন, উদয়ন বাংলাদেশ, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট, এসডিও, কোস্ট ট্রাস্ট, জাতীয় কৃষাণী শ্রমিক সমিতি, জাতীয় শ্রমিক জোট, ডাক দিয়ে যাই, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা, পিএসআই, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন (জাই), বাংলাদেশ ভ‚মিহীন সমিতি, বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন, মুক্তির ডাক, লেবার রিসোর্স সেন্টার, সংগ্রাম, সিডিপি, সংকল্প ট্রাস্ট, নেচার ক্যাম্পেইন, প্রান্তজন, ড্যাকোপ, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন, নিরাপদ নৌ-পথ জোট ও জন অধ্যায়ন কেন্দ্র।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে ২৯ এপ্রিল স্মরণ করতে গিয়ে কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক শওকত আলী টুটুল বলেন” ১৯৯১ সালের এই দিনে ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে সরকারী হিসাবে উপকূলে ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৪২ জন মানুষ নিহত এবং প্রায় এক কোটি মানুষ আশ্রয়হীন হয় এবং ২০ লাখ গবাদি পশু মারা যায়। ক্ষতি হয়েছিল ৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদ। কিন্তু উপকূলবাসী আজও নিরাপদ না। প্রায় প্রতি বছরই কোন না কোন ঘূর্ণিঝড়, অতিজোয়র জনিত বন্্যা এবং নিয়মিত নদী ও সমুদ্র ভাংগনের কারণে তারা নিজেদের আবাস ভূমি ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে ঢাকা চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহর গুলিতে।” তিনি সরকারের তরফ থেকে উপকূলবাসীর সুরক্ষায় পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দেওয়া এবং সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নিতে জোর দাবী জানান।
উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তাগণ প্রধান ৮ টি দাবী বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। দাবীসমূহ হচ্ছে: ১) পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং টেন্ডারিং প্রক্রিয়ায় সচ্ছতা প্রতিষ্ঠা ও সিস্টেম লস কমানো, ২) উপকূল রক্ষায় কংক্রিটের তৈরি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা ও চলতি বর্ষার পুর্বেই চলমান কার্যক্রম সমাপ্ত করা, ৩) পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের সকল তথ্য জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া, ৪) টেন্ডারিং ও ক্রয় কার্যক্রম স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করা, ৫) স্থানীয় সরকার ও প্রশাসন এবং জনগনের নিকট পানি উন্নয়ন বোর্ডের জবাবদিহি ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ৬) প্রয়োজনে সেনা বাহিনী নিয়োগ দিয়ে বাঁধ তৈরির কাজ সম্পন্ন করা, ৭) পানি উন্নয়ন বোর্ডের চলমান কার্যক্রম অডিট ও পর্যবেক্ষণ করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ চাই এবং ৮) উপকূল সুরক্ষাকে সকল উন্নয়ন পরিকল্পনার কেন্দ্রে নিয়ে আসা।
বক্তাদের মধ্যে আব্দুল কাদের হাজারী, নির্বাহী পরিচালক-অর্পন, উপকূলবাসীর সুরক্ষায় অতিদ্রæত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে আহবান জানান। তিনি আরো বলেন নিজ আবাস ভূমিতে নিরাপদে বসাবাস করতে পারা উপকূল বাসী সকল জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। আসিফ ইবাল নির্বাহী পরিচালক-মুক্তির ডাক, সরকারের সমালোচনা করে বলেন সরকার অর্থনৈতি লাভ বিবেচনায় হাউওয়ে, ব্রীজ, ফ্লাইওভার সহ অন্যান্য অবকাঠামোত উন্নয়ন খাতে পর্যাপ্ত বাজেট রাখছে অথচ ৪ কোটি উপকূলবাসীর রক্ষায় তেমন বরাদ্দ নেই। তিনি আগামী ২০৭-১৮ অর্থ বছরে উপকূলীয় জেলার বাঁধ সমুহ নির্মান ও মেরামতের জন্য পর্যপ্ত বাজেট বরাদ্দের দাবি জানান।
মানব বন্ধন সমাপনি বক্তবে মোস্তফা কামাল আকন্দ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্দেশ্যে চলতি বর্ষা শেষ হওয়ার পুর্বেই চলমান সকল কাজ সমাপ্ত করার তাগিদ দেন। এবিষয়ে তিনি মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ্এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংস্কারের দাবি করেন।
//প্রতিবেদন/২৯০৪২০১৭//
